গাঙচিল জীবন
পরের রাত্রিতে গাঙচিল হবো
এইরাত লেপ্টে দাও কপোলঘামে
শিহরণে ভিজিয়ে দাও শীতল ঠোঁট
উষ্ণ চুম্বুকে কর্ষণ করো আরব সাগর।
তোমার ফাল্গুন রতিমেঘ সন্ধ্যা
আরতি ভিজিয়ে ছুটায় বাদামী ঘোড়া
শাদা শরীরে আবহায়াত পান করে রুদ্র মিছিল
সহস্র উৎসব আলিঙ্গন করে বিবাগি দরজায়
টকটক আওয়াজ তোলে কবিতার চিত্রপট।
মোহনায় ভিজিয়ে দাও ঝর্ণার দ্বাদশী ছন্দ
আমাদের তুলকালামে ভেসে যাক
নৃশংস ঘোড়ার চৈতী ডামাডোল
ছোহবতে ছোহবতে কৃষ্ণচূড়ার ডালে আসুক
বিহ্বল উষ্ণ ঝড়ের মাতাল রক্তরাগ হোলি।
একটি রাতের দাগ সহস্র বছর আঁকা থাক
পৃথিবীর নির্ঘুম রূপালী শিশির আলাপনে
শূণ্যতার নোটবুকে লেখা থাক গোলাবী কথিকা
আমার গাঙচিল জীবন কোনোদিন
ফিরে এসে তোমার কৃষ্ণচূড়া অধর খুঁজবে।
কারণ তুমি
তোমার সাথে সখ্যতা গড়বার পর
মৃত্যুর মাছ খুলে দেয় মোহনার দ্বার
সমস্ত অহর্নিশ ভেসে যেতে থাকে বর্গী খোয়াড়ে
আয়ুর ডানায় চাঁদ-জোসনার খেলা
উভচর প্রাণীর মতো নিরীক্ষা করে
শিশির বিলুপ্তির অদেখা পাঠ।
আশ্চর্য চিতার কফিন হাত বাড়িয়ে
আহ্বান করে সন্যাসব্রতের রুদ্ধ দেউল
বিদ্ধ করে বিরহ ছুরির আগ্রাসী দাঁত
তৃষ্ণার্ত হৃৎপিণ্ডে মেখে দেয় প্রেত-রক্তের দাগ।
তোমার বিচ্ছেদ আমার ক্ষয়িষ্ণু বুকে
হৃদয় ভাঙার শূণ্যতা আঁকে।
বেদনার আর্তনাদ
চিন্তাকে লালন করি রোদে পুড়ে, বৃষ্টি ভিজে-
জল দেই, নিড়ানী দেই দরদের সালাদ মেখে
প্রতিদিন সেজেগুজে সূর্য মাথায় হেঁটে যাই
বিরান চোখ নিবেদন করে তৃষ্ণার্ত দস্তখত
কুসুমফুল অঙ্কুরোদ্গম করে যাপিত সংসার
প্রতি চন্দ্রালোকে জল সিঞ্চনের আবির ওড়ায়।
জোস্নার চাষ করে জোনাকির প্রেমার্ত লাঙল
আলোর চিমনিতে দুধশাদা আরতিমালা
আমার অলঙ্কার বধূর আঁচলে ঢাকা মুখ
সমুদ্রের দিকে ফুল-পাখির লজ্জার প্লাবন
ছুটে যায় জলের জীবন হাতড়ে।
যোজন প্রতিক্ষায় ফুটেছে জোস্নাশারদ
বিষপাত্রে সাঁতার কাটে প্রত্যাশার জিয়নকাঠি
স্বপ্নের সুরাই ভর্তি হাজার বেদনার আর্তনাদ
নিরস্ত্র শোকের মিছিল নিয়ে হৃদয় তোলপাড় করে।