ছুঁয়ে থাকা
এই ছুঁয়ে থাকা ছুঁয়ে থাকা নয়,
নৈশব্দের কিছু ধ্বনি,লেপ্টে থাকে
বুকপকেটে।অবজ্ঞা করো,তবু যাবে না কোথাও।
এই ছুঁয়ে থাকা একদিন ভোরে
ঠিক তারাফুলের মতো জেগে উঠবে।
একদিন, ঘ্রাণে ভরে যাবে বুক।মুখমণ্ডলজুড়ে
আস্ত আকাশ খেলা করবে জোছনা সোহাগে।
এই ছুঁয়ে থাকা শুধু শুধু ছুঁয়ে থাকা নয়
একদিন ফুলেরা ঝরে যাবে,রিক্ত ভোর
উঁকি দেবে যেকোনো হেমন্তের ভেজা ঘাসে
কিন্তু বুকের ভেতরে খুব চেনা ঘ্রাণ
আরও তীব্র ভালোবাসা নিয়ে
সুরভিত হবে নিশ্চিত, দেখো।
অপেক্ষা
তোমাদের সাথে দেখা হবে বলে
অপেক্ষায় থাকি,কালো জল পেরিয়ে হেঁটে যাই শিশিরের রাতে,গাঢ় ঘুমে
জেগে থাকে অসমাপ্ত রাত। শুধুমাত্র প্রতিবেশী ভোরের জন্য উন্মুখ থাকি
সারারাত।
কখন যে দেখা হবে,বেলা বাড়ার সাথিদের সাথে,
কখন যে এক্কা দোক্কা,কপালে আঙুলের টোকা দিয়ে
ডাক দেবো কোনো প্রিয় ফুল কিংবা নদ নদীর নামে,
আসলে তোমার কপালে আঙুলের ছোঁয়া দেবো বলে
পুরো বাল্যকাল অপেক্ষায় থাকি।
তোমাদের সাথে আবার কি দেখা হবে?
কোনো মাঘের মেলায় কিংবা পৌষের
শিশির ভেজা দুর্বাঘাসে খুব চেনা পদচ্ছায়ায়!
অপেক্ষায় থাকি,আবার সেই ভাঙা স্কুল,
বেঞ্চিতে লেখা প্রিয় নাম,ছোট্ট নদীর ভেতর অবিরাম ডুবসাঁতার!
অপেক্ষায় থাকি,কখন যে দরোজায়
মৃদু টোকা দিয়ে চিরচেনা ডাকনাম ধরে
ডাক দেবে প্রিয় স্বরে!
অপেক্ষায় থাকি,অসমাপ্ত রাত
যেন এক নিটোল ভোরের জন্য কী নিবিড়
অপেক্ষায় থাকে।
ছায়া
ছায়াটুকু ঝুলে থাক পিঠে, কাঁধে, বুক বরাবর
ছায়াটুকু লেগে থাক জামার আস্তিনে,
পাজামার গিঁটে,বিন্যস্ত চুলের ভাঁজে,কানের লতিতে।
ছায়ার ভেতরেই তো আরেকটা আমি,অবিন্যস্ত,
এবড়োখেবড়ো, ভাঙা কার্ণিশে ঝুলে থাকা মৃতপ্রায় কাক।
পুরনো দালানের গায়ে পাখির বর্জ্য থেকে জন্ম নেওয়া
বটচারার আদুল শেকড়েও লেগে আছে মায়াময় ছায়ার অতীত।
ছায়া যেন বড়োই মায়াময়,
বুকে লেগে থাকা তোমার লিপ্সটিকের মতো ভারি
আদুরে ও বিশ্বস্ত চিহ্নের মতো সারাক্ষণ সঙ্গী অপার।
পূর্বপুরুষ থেকে শুরু করে আমার কালের
এক অবোধ সাক্ষী এই পরজীবী অলীক আঁধার।