এ আমার রোগ নাকি শোক!
কিভাবে এতটা নুয়ে থাকে মানুষ লতার মতো মেরুদণ্ডহীনতায়!
যাদের ভেবেছি ব্যক্তিত্বে হীরকদ্যুতি
স্বার্থের গোপন গুহায় নিজেকে বেচে তারা
সকাল বিকাল মধ্যরাত;
ভেবেছি তাদের দৃঢ়তার বৃক্ষ একদিন।
এখন তো দেখি সবই যে মুখোশের দারুণ কারুকাজ
ভণ্ডের মধুকণ্ঠে জীবনের গান
নির্লজ্জ লোভের লম্বা জিহ্বা চেটে খায় মলমূত্র যেখানে যা পায়,
সামান্য আলোও থাকে না তো বুকের গহিন,
অথচ তারাই দেবতার চেহারা অন্তরে আমাদের।
মানুষের কত রূপ!
ভালোবাসা ভুলের অঙ্কে ভরে যায়
দেবতার মতো করে রেখেছি যাদের অন্তরদেউলে,
এই ভয়াবহ ভুলে নিজেই এখন নিজেকে ছিঁড়ে ফেলি ছিন্নভিন্ন করে,
ছুড়ে ফেলি ভাগাড়ে—দুর্গন্ধের স্তূপে, বিশ্বাসে বিষাক্ত ছোবল।
ভেতরে-বাইরে কত সহস্র রূপের বসতি একই মানুষের!
এই বেদনায় নিজের হৃৎপিণ্ড নিজেই টুকরো টুকরো করে
সালাদ বানিয়ে খাই—গড়াই ব্রিজের এককোণে নিবিড় আড়ালে,
অজগাঁয়ের মাঝরাতের অন্ধকারের মতো আমি একা,
. এ আমার রোগ, না কি শোক!
অন্ধমোহ
ক্ষতবিক্ষত রাতের গভীরতা লাবণ্যবালিকা
কাদামাটি হাওড়ের যৌবন জীবন
সরল কৃষক
কবিতার সবুজ জমিন বুক।
পা চাটে নির্লজ্জ
মহারথি
মুখ এঁটে শামুকজীবন
বীরপুরুষ অন্যের রোদে।
বিষাক্ত ছোবলে কাতরায় রাত
লুকায় দিনের তেজস্বী মধ্যদুপুর
পুরুষশূন্য চৌচির গ্রামে
জেগে আছে কবিতার রমণী সরকি হাতে।
রাতও শেষ হয়
আলোরাও ডোবে গোপন মৌতাতে,
জীবনও যায়,
তবুও অন্ধমোহ জাগে মাতালের সুখে।
আলো ও আঁধারের গল্প
নিশ্বাস ফুরালে মৃত্যু হয়
মানুষের,
সকল প্রাণীর।
তারও আগে মৃত্যু হয় শুধু মানুষের
ফুরালে যে প্রয়োজন;
জীবনের অঙ্ক রামধনু মেঘ
এই তো রঙিন
এই তো বিলিন দূর অন্ধকার।
মাথা
কখন যে নিজের মাথাটা
নিজেরই পায়ের কাছে
নেমে এসে
জড়োকুড়ো হয়ে
মিউ মিউ ডাকে অচেনা বিড়াল।
আমি তাকে সান্ত্বনা দেই
বলি, জীবন তো এমনই।
আমার মাথাটা বিস্ময়ে তাকায়
আমার দিকেই;
ভাবি—
এ মাথা তো আমার সে মাথা নয়!
কবে কবে এই মাথা বুদ্ধিজীবী হলো!
নিজেই জানি না।
তবে—
জেনেছি মাথাবিক্রির দারুণ কৌশল।