হৃদয়ের বন্ধ দ্বার
তুমি আসবে না জেনেও অপেক্ষা নয়, প্রতিক্ষা করি।
ভালোবাসো না জেনেও ভালোবাসি।
তুমি আমার হবে না জেনেও পরম শক্তির কাছে তোমায় চেয়ে খত লিখে,
হৃদয়ের দ্বার বন্ধ করে চাবিটা দিলেম সমুদ্রে ফেলে।
যদি কোনোদিন
যদি কোনোদিন আসতে ইচ্ছে হয়,
সমুদ্রের কাছ থেকে চাবি নিয়ে এসো।
অবশ্য, চাই না হৃদয়ের বন্ধ দ্বার আর উন্মুক্ত হোক,
দ্বারে অবহেলার হাজারো স্তম্ভ দাঁড়িয়ে;
স্তম্ভের কোলঘেঁষে শূন্যতার বড় বড় খাই,
যেখান থেকে মৃত প্রণয়াকাঙ্ক্ষীর আত্মা পচা দুর্গন্ধ বেরোয়।
তুমি এসো না
দম বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারো।
চাই না, চাই না তোমার মৃত্যু হোক।
যথেষ্ট অযৌক্তিক হওয়া সত্ত্বেও
তোমাকে ভালোবাসি।
ভালোবাসার জন্য যোগ্যতা অনুযায়ী কোনো ফরম ফিলাপ করতে হয় না,
যদি হতো, তাহলে হয়তো
সময়ের কাছে পরাজিত হতে হতো না প্রণয়াসক্ত প্রেমিকাকে।
চাঁদের দীর্ঘশ্বাস
গোলাপের পাপড়ি হয়ে ছড়িয়ে থাকি তোমার যাত্রা পথে,
পদদলিত করে চলে যাও বেখেয়ালে।
তোমার তৃষ্ণার জল হতে চেয়ে
চাতকিনীর মতো ঊর্ধ্বাকাশে
কেঁদে কেঁদে কাটিয়ে দিয়েছি কোটি বছর।
তবু তোমার তৃষ্ণা মেটানোর মতো জল পেলাম না।
নিস্তব্ধ রাতে রূপবতী চাঁদ নিঃসঙ্গতার চাদর ছুড়ে ফেলে হাসছে মিটিমিটি,
আমিও কত পূর্ণিমা অঙ্গে রাখি;
আলোকিত করতে তোমায়
তবু পারি না
পূর্ণিমা রাতে মগ্ন আমি
আমার অস্তিত্ব মিশে যায় তোমাতে,
এভাবে মিশে আছি শত কোটি বছর,
তবু ছুঁতে পারি না তোমায়।
দুর্ভেদ্য এক কুঠরিতে হৃদয় রেখেছ,
কত কোটি বছর কাটালে তোমার হৃদয় ছুঁতে পাবো?
মনে হয় শত সহস্র বছর নির্বাক আমি,
লক্ষ লক্ষ শব্দ তীরের বেগে ছুটে তোমার পানে,
বাঁধা পেয়ে আর্তনাদে কেঁপে ওঠে সমগ্র পৃথিবী,
তবু তোমার হৃদয় কাঁপে না।
চড়ুই পাখির মতো ছোট্ট হয়ে গেছি তোমার বুকে লুকিয়ে থাকবো বলে,
এটুকুও জায়গা হয় না, হায়!
হৃদয়কাব্য
আমি তোমার কাব্য হবো
হাজার শব্দ জুড়ে তুমি আমার শরীর গড়ো
আঁখি যখন আঁকবে তুমি, চঞ্চল হরিনীকে দেখে নিও
আঁখি ভরে পদ্মপাতার শিশির দিও
কাঁদব যখন, নরম তুলোর বালিশ হয়ে অশ্রুকণা শুষে নিও।
তুমি আমার ওষ্ঠ এঁকো গোলাপ পাপড়ি দিয়ে,
কবোষ্ণ ওষ্ঠে, ওষ্ঠ রেখে শীতল কর।
কৃষ্ণের বাঁশির মতো নাক এঁকো,
নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম দিও,
ঘাম মোছার বাহানায় নাক ঘষে আদর দিও।
আমি তোমার কাব্য হবো
কবিতার শব্দ দিয়ে তুমি আমার শরীর গড়ো।
তুমি আমার বক্ষ এঁকে কবিতার আঁচলে ঢেকে দিও।
নাভীতে যেন জল ধরে খেয়াল করে এঁকো।
চরণ যুগল এঁকে, আলতা দিয়ে রাঙিয়ে দিও।
মুক্তোদানা বর্ণ দিয়ে নূপুর এঁকো
পরাবে যখন,
আলতো করে পায়ের পাতা ছুঁয়ে দিও
তারপর…
সাবধানে! হৃদয় এঁকো ভালোবাসায় পূর্ণ করে।
শোন শোন হৃদয়ের এক কোণে খণ্ড খণ্ড বরফ রেখো,
হৃদয় ভেঙে পালাও যদি, বরফ দিয়ে শীতল করার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাবো।
তবুও আমি তোমার কাব্য হবো
কবিতার শব্দ দিয়ে তুমি আমার শরীর গড়ো।