একাকীত্বের সব দহন তোমাকে দিলাম
তুমি জানোনি একলা জীবন কতটা ভয়াবহ হতে পারে
রাত বাড়লেই সব অসুখগুলো দলবেঁধে বেড়াতে আসে
কত ঘুনে খেয়ে গেছে জীবনের বল্কল সব—
এখন জীবন নেই-শুধু শরীরটা পড়ে আছে
আর কতোকাল এই ভিসুবিয়াসে জ্বালা আমি জানিনি
শৈশবের যেসব খেলায় আমি পরাজিত
তীরবেধা পাখির মতো দাপাদাপি করে বেঁচে থাকি
রাত্রির নীরবতা সেসব জেনেছিল—জেনেছিল—পাতারা-বৃক্ষ
কত কষ্টে রাত চলে যায় দিন আসে
বুভুক্ষু মানুষের অন্তর্ঝারা পাঠ করে আমি জেনেছি
দ্রাক্ষার গ্লাসে মুখ লাগিয়ে বুঝেছি আমার ছায়া আর দেখা যায় না সেখানে।
ছায়ারাও লুকালে জীবনের পাঠগুলা শেষ হয়ে যায়।
রাত্রির করতলে হাত পেতে স্নানঘরের জলভরা বালতির নীরবতায় আমি নিজেকে
ক্ষত করতে করতে এখন আমি ক্লান্ত
দোকান থেকে ঘুম কিনলেও সে আর সাড়া দেয় না
এই ক্ষয় পুষে আমি ঝরা পাতাদের নাম পড়তে গিয়ে দেখি সেখানে
পড়ে আছে আমার কংকাল—তাই চলে যাবো সবক্ষয় বুকে নিয়ে
একা একা মোহিনী রাতের সঙ্গে আর কত অভিনয়
বেচেঁ থাকা মানেই মৃত্যুকে না জানার ভানগুলো তোমাকে পাঠাবো—
খাম খুলে দেখো—সেখানে একটা কংকাল পড়ে আছে
একটু সুখের জন্য যতবার হাত পেতেছি—কোথাও কেউ নেই
একাকী রাত শুধু সাক্ষী—একা একা চলে আসার মতো
আর কোনো পথ নেই—
একা এবং একা
একাকীত্বেও সব দহন তোমাকে দিয়ে চলে যাবো
দূরের ঠিকানায়—
চলে আসার পেছনে
চলে আসার পেছনে একটি অঙ্ক থাকে
একটি চাপা কান্নার পাতলুন থাকে
পতাকার মতো ওড়ে সে পাতলুন আর কষ্টের গান গায়
তোমরা কি তার ভাষা বোঝো?
আমি কোনো কিছুই না বুঝে গাড়িতে উঠে পড়ে দেখি
একটি ভাস্কর্য-ইট কাঠের সে ভাস্কর্য
এক সময় অদৃশ্য হলেও
বস্তু জগতে ভাস্কর্যতে বিদায়ের আবাহন থাকে।
আমি কোনো কিছুই না বুঝে দেখি
বেদনার রাতগুলো একটা একটা অমীমাংসিত শোকসভা বসায়
সবহারা মানুষের কারও কাছে
একটি অব্যক্ত চাপা কান্না চিন্তার চৌকাঠে
লেগে থাকে একটা বর্ষণমুখর বৃষ্টির অপেক্ষায়—
তোমার জন্য কিছুই করা হলো না
তোমার জন্য কিছুই করতে পারিনি
আমার ব্যর্থতারা সব রাত হয়ে ঝুলে থাকে জানালার মরচে ধরা গ্রিলে
অন্তর্গত যন্ত্রনা হয়ে ঘাসফুল ফোটে—
সব ভাবতেই পাজরের বাঁকে বাঁকে
মেঘ হয়ে জমে থাকে। আকাশ জোড়া ব্যর্থতা
নিয়ে আমি একা রাত পাহারা দেই।
মেরুন কালারের একটা জামা-একজোড়া ভালো জুতো
সাজানো দেখি শপিং মলের গ্লাসের এ পাশ থেকে
সব দেখে দেখে বয়স বাড়ে,আমার শরীরে বয়সের কামড়ের ক্ষত বাড়ে
দিন যেন আর আসে না—
তোমার টানাপোড়েন দেখে দগ্ধ হই
একটু অসৎ হলেই, আপসের বেড়ায় টোকা দিলেই
বৃষ্টির মতো চলে আসে সুবিধারা- আমি পারি না।
ব্যর্থতার সব দ্বার খোলা- বাতাস আসে যায়
কিছুই করা হয় না—
এভাবেই জীবনের সব অঙ্ক না মিলিয়ে চলে যাবো
শুধু আক্ষেপগুলো জেগে থাকবে-শেষ অবধি
চলে গেলে বাতাসে হিম আসবে—
পাখির কাতর স্বও দীর্ঘায়িত হবে
বিরক্তির চন্দ্রাবতী ফুটবে তোমার অবলা চন্দ্রিমায়
আমাকে ভাসিয়ে দিও ভাটিয়ালি গানে,ছেড়া ন্যাপকিন
অযত্ন-অবহেলায় ভুলে যেও—
গব ব্যর্থতায় ভরা একটা জীবনে—আমিও ভালো থাকিনি
মনে করে অন্তত: ক্ষমা করে দিও।