নদী হারালে কষ্ট বেরিয়ে আসে
পাজরের হাড়ে অনেক পাথর জেগে থাকে, টের পাই
পাথর ঘুমায় না, শুধু তাকিয়ে দেখে বিশ্বরূপ-ক্ষুধা ,মন্দা
তুমি সফেদ পোশাক পড়ে কাকাতুয়া, কথা বলো
জড় নিদ্রা ভেঙে যায়, পাড়ভাঙা নদী আমি স্বস্তি খুঁজি
তোমার কপাল জুড়ে টিপে সূর্য খেলে
আমি সূর্য দেখতে ভুলে গেছি—শৈশবে মায়ের হাত ধরে
শীতের সূর্য দেখার কথা মনে পড়ে, মাঠের কলুই শাকে মুক্তো
দানার হরেক রঙে দেল খেতো
মা বলতেন, শিশির মুখে মাখলে সূর্যেও শুষ্কতা থাকে না।
আমি মুখে শিশির মাখতে মাখতে চলে যেতাম কামার পাড়ার শীতলা খোলা অবধি
কানে ভাসতো পাজর ভাঙা লোহা পেটানোর শব্দ।
তোমার চোখে খর সুর্যেও নদী বয়ে যায়—
পাশে বসে দেখার দিন আর আসে না,
কসাইয়ের ছুরির মতো সব ধীরে ধীওে রক্ত খুঁজতে ব্যস্ত
যেভাবে প্যালেস্টাইনি শিশু-নারী বোমায় বিক্ষত করতে ব্যস্ত
অজস্র বোমা আর গুলি।
আমার ভিতরে পাথর বাড়ে
আর সব দেখে আমার ভিতওে পাথরের সংখ্যা বাড়ে।
নদী হারালে কষ্ট বেরিয়ে আসে স্রোতমুখী—
যেভাবে তুমি বার বার হারিয়ে যাও—নদী
পাথর কথা ভাবতে পারে না-সব দ্যাখে
অপেক্ষা ফুরাবে না জানি
ফোন কল আসে না,পাখিগুলো পাতা হয়ে উড়ে গেছে
বসন্ত আসার আগেই নিঃস্ব হয়ে বসে আছি
পাতা কুড়ানি সেই শৈশবগুলো—নিয়ে গেছে কোন যাদুকর
তবু বসে থাকি শেষ পাড়ানির খেয়া ঘাটে
রাত হলে ঝাঁক বেঁধে শীতের পাখিরা উড়ে গেছে তোমার বাড়ির দিকে
তারপর থেকে কেমন সব দিন আসে প্রতিদিন…
দেখা হয়না কারো সঙ্গে, নির্বাসনে সময় মাফিক ফোন কলগুলো
তুমি ঘুমালে এখন অন্ধকার আর কিছু অসুখ বিনা অনুমতিতেই ঢুকে পড়ে ঘরে
টেবিলে বসে থাকে দশ টাকার ঘুমের স্ট্রিপ আরো কতো কি
অচেনা দিনগুলো কেমন ভাষায় কথা বলে—আমি কারও ভাষা বুঝি না
তবে তুমি কি সেই জাদুকর?
পথের পাশে, পাতা না পাখিরা মৃত
ক্ষুধার পাকস্থলি জ্বলে দাউ দাউ
দমকল বাহিনী ঘুমায়
এ শহর দিন দিন অচেনা হয়ে উঠছে—চলে যাবো—দেখা হলো না
এটাই বার্তা পাঠায় অচেনা ঘুমেরা
রাত শেষ হলে ভাবি চলে যাবো
তবু কী এক আকর্ষণে বাধা পড়ে আছি—তবুও চলে যাওয়ার আগে
একবার নানা ব্যঞ্জনায় টেবিল ভরে থাকবে তোর পেলব হাতের ছোঁয়ায়।
আমার অপেক্ষা ফুরাবে না জানি—তবু এটাই শেষ রেখা এঁকে দিয়ে যাই।
হারিয়ে যেতে যেতে
কিভাবে যেন হারিয়ে গেছ,স্কুলের বল পেন ইরেজর, পুরানো বন্ধু
হারিয়ে গেছ…
এভাবে হারালে বসন্তের বৈভব আর থাকে না।
একটা কোকিল ডেকে যায় গভীর রাতে
জানালায় ঝুলে থাকে অন্ধকার
সেই পথ-বদলে গেছে বুঝি
তবুও পথ চাওয়া আর শেষ হয় না।
প্রিয় জন চলে গেলে কিছু ছায়া,পদচিহ্ন কিছু দিন থাকে বৈকি
তারপর তাও শূন্যে মিলিয়ে যায়…
ব্যর্থতা পরাজিত পাখির ডানার মতো পড়ে থাকে এখানে-সেখানে
আাঙুলের স্পর্শগুলো লেগে থাকে এখানে-সেখানে…
সব ভুলে গেলেও কিতছু কথা জেগে থাকেরাত্রির গুহায়
আলতামীরার গুহাবাসীর মতো বাইসন আঁকার হাত ক্রমশ দুর্বল হয়ে আসে
তবু পদ্মার পাড়ে ঢেউ মুছে নিয়ে যায় প্রদীপ্ত সকার গুলো।
পারলে পাঠিয়ে দিও কিছু মৃত স্মৃতি, প্রথম দেখার সেই আনন্দ প্রহর
তাও হারিয়ে যাবে একদিন-কম্পিউটারের নির্ঘুম বাটনগুলো
কড়া নাড়ে স্মৃতির খিড়কিতে—এভাবে কতদিন বাঁচা যায়
ঔাল টিপ পড়ে একদিন অন্তত এসা কিছু স্মৃতি যদি মেলে মিলবে
নতুবা পুকুরের জলের ছায়ায় খুঁজবো-শেষ দেখার স্মৃতিগুলো
কফি কালারের রোদ আবার উঠলে পরিবর্তিত মৌসুমে
হারানোর শোকগুলো, আনন্দ হয়ে ওঠে যদি-সাংগ্রাই উৎসবে ফুল ভাসানোর
কল্লোলিত জলে একটা কাক্সিক্ষত মুখ ভেসে উঠলে এমন ক্ষতি আর কী হবে?